পহেলা বৈশাখ, এক শিরকী আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতিতে ভরপুর একটি দিনের নাম। অথচ আল্লাহ্র নিকট সবচেয়ে বড় অপরাধ হচ্ছে শিরক। মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেন-
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
-স্মরণ করো যখন লোকমান নিজের ছেলেকে উপদেশ দিচ্ছিল, সে বললো, “হে পুত্র! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না৷ যথার্থই শিরক অনেক বড় জুলুম৷[সূরা লুক্বমান ১৩]
মহান আল্লাহ্ আরও বলেন,
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
-“নিশ্চয়ই আল্লাহ
তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না, কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। [সূরা নিসা ৪৮]
.
এই পহেলা বৈশাখ উৎযাপন করতে গিয়ে আমরা কতগুলো শিরকী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ি, যেমন-
১। মঙ্গল শোভাযাত্রা:
এই দিনকে পালনের মাধ্যমে মঙ্গল কামনা করা হয়। মহান আল্লাহ্ বলেন-
فَإِذَا جَاءَتْهُمُ الْحَسَنَةُ قَالُوا لَنَا هَٰذِهِ ۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَطَّيَّرُوا بِمُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُ ۗ أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِندَ اللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
-শুনে রাখ তাদের অশুভ আলামতের চাবিকাঠি একমাত্র আল্লাহরই হাতে রয়েছে, অথচ এরা জানে না। [সুরা আ’রাফ ১৩১]
নাবী ﷺ বলেন,
-অশুভ আলামত বা দুর্ভাগ্যের ধারণা যে ব্যক্তিকে তার স্বীয় প্রয়োজন, দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে দূরে রাখল সে মূলত শিরক করল। [মুসনাদে আহমাদ ২/২২০]
অপর হাদিসে নাবী ﷺ বলেন,
أَحْسَنُهَا الْفَأْلُ وَلاَ تَرُدُّ مُسْلِمًا فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ لاَ يَأْتِي بِالْحَسَنَاتِ إِلاَّ أَنْتَ وَلاَ يَدْفَعُ السَّيِّئَاتِ إِلاَّ أَنْتَ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِكَ
-হে আল্লাহ্ তুমি ছাড়া কেউ কল্যাণ দিতে পারে না, তুমি ছাড়া কেউ অকল্যাণ ও দুরবস্থা দূর করতে পারে না। ক্ষমতা ও শক্তির আধার একমাত্র তুমিই। [সুনানে আবু দাউদ হা/৩৯১৯]
.
২। উল্কি অঙ্কন:
১লা বৈশাখ উপলক্ষে যুবক-যুবতীরা নিজেদের গালে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে উল্কি অঙ্কন করে। এ সম্পর্কে রসূল ﷺ বলেছেন, যে পরচুলা লাগায় এবং অন্যের দ্বারা লাগিয়ে নেয়, যে নারী দেহে কিছু অংকন করে এবং অন্যের দ্বারা করিয়ে নেই উভয়ের প্রতি আল্লাহ্ অভিশাপ করেছেন। [বুখারী, মুসলিম হা/৪৪৩০- পোশাক অধ্যায়]
.
৩। গান-বাদ্য:
গান ও ঢোল তবলা ছাড়া পহেলা বৈশাখ হয় না। আর রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “আমার উম্মতের কিছু লোক এমন হবে, যারা জেনা, (পুরুষদের জন্য) সিল্ক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।”–(বুখারী)।
.
৪। নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা চর্চা:
শালীন মেয়েরাও পহেলা বৈশাখের নামে অর্ধ নগ্ন হয়ে বের হয়। গরমের দিনে তথাকথিত পহেলা বৈশাখের সাদা শাড়ি ঘামে ভিজে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অত্যন্ত নোংরা ভাবে প্রকাশিত হয়। তাছাড়াও নারী পুরুষ ঢলাঢলির মাধ্যমে ব্যভিচারের সবচে বড় ক্ষেত্র তৈরি হয় পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতিতে। পান্তা-ইলিশের সাথে ইদানীং যোগ হয়েছে, যুবতী মেয়েদের হাতে খেয়ে মনের নোংরা চাহিদা মেটানো।
উল্কি অঙ্কনের নামেও ছেলে-মেয়ে একে অন্যকে স্পর্শ করা এক প্রকাশ্য অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতার ক্ষেত্র তৈরি করছে।
.
এই সবকিছুই শরীয়তে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ! তাই আসুন বিজাতীয় ধর্মীয় সংস্কৃতি অনুসরণ ত্যাগ করে আমরা পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করি।


0 মন্তব্যসমূহ