#দিগন্ত_থেকে_অনন্ত,,,
পর্ব - ১
সূর্যের চাহনী প্রায় নিভু নিভু,কিছুক্ষণের মধ্যেই চারিদিকে অাঁধার নেমে আসবে। সূর্যের শেষ কিরণ উঁকি দিয়ে জানা দিচ্ছে আমার বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে।
সিফাত বসে আছে মাঠের এক প্রান্তে।বাচ্চারা ছোটা-ছুটি করছে।বাচ্চাদের খেলা - ধুলা দেখে সিফাতের মনে পড়ে গেল তার ছোট বেলার বন্ধু সিয়ামের কথা।মনে পড়ে গেল তার সাথে কাটানো সেই সোনালি অতীতের বিলীন হওয়া দিনগুলির কথা। কতই না সুন্দর ছিল,মধুময় ছিল সেই দিন গুলো। ভাবতেই হৃদয়ের গভীরে নাড়া দিয়ে ওঠে।যদিও আজ তারা দুজন দু পথের পথিক।
একজন হেদায়েতের পথে। যে পথ প্রিয় নবী রাসূল (সা:)দেখিয়ে গেছেন,অপরজন শয়তানের পথে দুনিয়াবি অন্ধভক্তি নিয়ে পথ চলছে।
সিয়াম ভুলে গেছে আল্লাহর কথা,যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন।সে ভুলে গেছে চিরস্থায়ী ফয়সালার কথা, আল্লাহকে পেতে হলে দুনিয়াকে নয় অদেখা আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়, ভালোবাসতে হয়।
আর আল্লাহর নির্দেশিত পথে এমন সব সহজ ও আদর্শিক বিধান রয়েছে যার জন্য প্রতিটা আত্মা ছটফট ও ব্যকুল হয়ে থাকে। কিন্তু শয়তান মানবজাতির শত্রু, সে পথে বাধা ও প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে কল্যাণের পথে হিমশিম ও কাঁটাতারের বেড়ায় মানব মস্তিষ্ক ও নফস কে আড়ষ্ট করে রাখে। অথচ মানব সন্তান শয়তানের কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করে চলতে পারলেই আল্লাহর সহজসাধ্য বিধান মাথা পেতে নেয়া সম্ভব । আর সে পথে শেষ পর্যন্ত হাঁটতে পারলেই আল্লাহর ওয়াদাকৃত চিরস্থায়ী জান্নাতুল ফেরদৌসে পৌঁছানো যেতে পারে।
আসলে সে পথ সহজগম্য হলেও শয়তানের কুমন্ত্রণার জালে পদে পদে দুর্গম বেড়ায় পরিবেষ্টিত। কিন্তু যারা এই দুর্গম পথ শেষ পর্যন্ত পাড়ি দিয়ে রবের নির্দেশিত পথ অব্দি চলতে পারবে সেই প্রকৃত সৌভাগ্যবান ,আসলেই সে সফল।আর সে পথই নিয়ে যায় চূড়ান্ত ফয়সালাকৃত জান্নাতি মাকামে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়,সিয়াম ঠিক উল্টো পথে চলছে।দুনিয়ার নেশা তাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে।সে যতই এই দুনিয়াবি পথ থেকে দূরে সরে যেতে চায় দুনিয়া বেশি করে তাকে আগলে ধরে।
সিয়াম জানে সে ভুল পথ পাড়ি দিচ্ছে।এ পথ তাকে চূড়ান্ত ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যাবে।তার আত্মা তার রবের সাথে যে জন্য ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিল সে ব্যাপারে যেন ভুলেই গেছে।লোভ-লালসার মায়াজাল তাকে আরো গভীর থেকে গভীরেই নিয়ে যাচ্ছে। দুনিটা তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে যেনো ছাড়ছেই না। আর এই পথ যে পাড়ি দেয় তাকে তো যেতে হয় ধ্বংসের পথ চিরস্থায়ী জাহান্নাম পর্যন্ত ।
সিফাত ভাবছে কীভাবে তার শৈশবের বন্ধুকে দিগন্ত থেকে অনন্তের জান্নাতে নিয়ে যাওয়া যায়। ভাবতে ভাবতে তার রবের ঘর থেকে কল্যাণের বার্তা এসে গেল।মসজিদের সুউচ্চ মিনার থেকে শোনা গেল তার রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়ার আহবান,
হাইয়া আলাছ সালাহ্ !
হাইয়া আলাছ সালাহ্ !
ওযুটা সেরে নেয়া যাক।রবের ডাকে সারা দিতে হবে!
চলবে,,,


0 মন্তব্যসমূহ